আমাদের সিলেট ডটকম ডেস্ক: জাতীয় পার্টির নির্বাচন এবং সর্বদলীয় সরকার থেকে সরে যাওয়ার সিদ্ধান্তে চরম অস্বস্তিতে পড়েছে আওয়ামী লীগের মাঠ পর্যায়ের নেতাকর্মীরা। এ ছাড়া জাপা না আসলে নির্বাচন আদৌ করা সম্ভব হবে কী-না এবং হলেও তা সর্বমহলে গ্রহণযোগ্যতা পাবে কী-না- এমন শঙ্কায় পড়েছে ক্ষমতাসীন দলটি।
এরশাদের সিদ্ধান্তের পর সারাদেশের আওয়ামী লীগের মাঠপর্যায়ের নেতাকর্মীদের মধ্যেও চরম হতাশা নেমে এসেছে। দলটির নীতিনির্ধারক নেতারা এ বিষয়ে আরও অপেক্ষা করতে বললেও কেউই ভরসা পাচ্ছেন না। আশ্বস্ত ও হতে পারছেন না তৃণমূলের নেতাকর্মীরা।বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত দলীয় প্রার্থীরাও অস্বস্তিকর পরিস্থিতির মুখে পড়ে গেছেন। জাতীয় পার্টি এর আগে মহাজোট ছাড়ার ঘোষণা দিলেও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সর্বদলীয় সরকারে যোগ দিয়ে নির্বাচনে যাওয়ার ঘোষণাও দিয়েছিল। সারাদেশের ৩০০ আসনের মধ্যে ২৬১ আসনে দলটির প্রার্থীরা মনোনয়নপত্র জমা দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে নির্বাচনী মাঠে নেমেও পড়েছিলেন। এ অবস্থায় হঠাৎ করেই কী এমন ঘটনা ঘটলো যে এরশাদ নির্বাচন থেকে সরে আসার ঘোষণা দিলেন- তা নিয়ে সর্বত্রই চলছে চুলচেরা বিশ্লেষণ।
দলটির নীতিনির্ধারক নেতারা আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়ায় অবশ্য এরশাদের ‘চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের’ জন্য আরও অপেক্ষার কথাই বলছেন। তাদের মতে, নির্বাচন প্রসঙ্গে এরশাদ আগেও নানারকম বক্তব্য দিয়ে পরে সরে এসেছেন। নির্বাচনে না যাওয়া সংক্রান্ত বক্তব্যেও তিনি কতটা সময় অনঢ় থাকেন, সেটিই দেখার বিষয়। আজ-কালের মধ্যে তার এই বক্তব্য থেকেও তিনি সরে আসবেন বলেও তাদের বিশ্বাস। আবার কেন্দ্রীয় নেতাদের কেউ কেউ ‘এরশাদের ঘোষণায় গুরুত্ব দেওয়ার কিছু নেই’- এমন মন্তব্য করলেও দলটির সব পর্যায়ের নিদারুণ হতাশাকে ঢেকে রাখাও যাচ্ছে না।
দলের নীতিনির্ধারক পর্যায়ের নেতারাও অনেকটাই হতবাক ও হতচকিত হয়ে পড়েছেন। এরশাদকে বাগে আনার সব রকমের প্রচেষ্টা চালিয়েও এখন পর্যন্ত সফলতার দেখা মেলেনি। আওয়ামী লীগসহ তার মিত্র জোট ১৩ দল শরিক দলগুলোর অনেক নেতাও জাতীয় পার্টির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাদের সঙ্গে কথা বলেও সুরাহা করতে পারছেন না। এ অবস্থায় আগামী দিনের পরিস্থিতি সম্পর্কে কোন দিক-নির্দেশনা না পেয়ে অনেকটা কিংকর্তব্যবিমূঢ়ও আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা।
অবশ্য দলীয় নেতারা এখনো অপেক্ষার কথাই বলে যাচ্ছেন। তারা বলছেন, আওয়ামী লীগের সঙ্গে দর কষাকষির হিসাব মেলাতেই এরশাদ এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। যা নিরসন করা আওয়ামী লীগের জন্য কঠিন কিছুই হবে না। এরশাদের দাবি অনুযায়ী নির্বাচনী তফসিল পেছানো এবং তার বিরুদ্ধে থাকা মঞ্জুর হত্যা মামলাসহ দুইটি মামলা প্রত্যাহার বিষয়ে স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাই আশ্বাস দিয়েছেন। ফলে দুই-একদিনের মধ্যেই সব জটিলতার অবসান হয়ে এরশাদ নির্বাচনী মাঠে ফিরে আসবেন বলেই তাদের ধারণা।
অনেকের মতে, নির্বাচনে অংশগ্রহণের সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর জাপার প্রভাবশালী নেতা কাজী জাফর আহমেদ ও তার অনুসারীদের বিদ্রোহ এবং আলাদা দল গঠনের ঘোষণায় এরশাদ রীতিমত চিন্তিত হয়ে পড়েছিলেন। এমনকি জাপা থেকে ২৯৯ জন প্রার্থী ঘোষণা করা হলেও কাজী জাফরের অনুসারী হিসেবে পরিচিত এমন ৩৮ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্রই জমা দেননি- যাদের মধ্যে আবার ৪ জন বর্তমান এমপিও রয়েছে। এ অবস্থায় নিজ দলের ভাঙন ঠেকানোর সর্বশেষ প্রচেষ্টার অংশ হিসেবেই হয়তো বা এরশাদ এমন ঘোষণা দিতে পারেন। জাপার ভাঙন বিষয়ে আওয়ামী লীগের করণীয় কিছু না থাকলেও মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার নতুন তারিখ নির্ধারণসহ তফসিলে কিছু পরিবর্তন আনলেই এরশাদকে আবারও নির্বাচনের মাঠে নিয়ে আসার প্রচেষ্টাও সফল হবে বলে মনে করছেন দলীয় নীতিনির্ধারক মহল।
এরশাদের সিদ্ধান্তে চরম অস্বস্তিতে আ’লীগের মাঠ পর্যায়ের নেতা-কর্মীরা
Friday, December 6, 2013
Labels:
# আমাদের সিলেট
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
No comments:
Post a Comment