বিশ্বনাথ উপজেলার বিএনপি-জামায়াত সমর্থিত ৭টি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। নিখোঁজ বিএনপি নেতা এম ইলিয়াস আলী ‘নিখোঁজ’ ইস্যুতে আন্দোলন করতে গিয়ে গত ২৩ এপ্রিল পুলিশের সাথে জনতার সংঘর্ষ ও উপজেলা পরিষদের ভাংচুর-অগ্নি সংযোগের ঘটনায় আসামী হওয়ার কারণে ২য় বারের মতো তাদেরকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।
নিখোঁজ বিএনপি নেতা এম ইলিয়াস আলী ‘নিখোঁজ’ ইস্যুতে আন্দোলন করতে গিয়ে গত বছরের ২৩ এপ্রিল পুলিশের সাথে জনতার সংঘর্ষ ও উপজেলা পরিষদের ভাংচুর-অগ্নি সংযোগের ঘটনায় আসামী হওয়ার কারণে গত ২০ নভেম্বর স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রনালয় (ইউনিয়ন পরিষদ শাখা) উপ-সচিব আবু তাহের মুহাম্মদ জাবের বরখাস্তের এ আদেশ দেন। এ আদেশনামা গত রবিবার মন্ত্রনালয় থেকে সিলেটের জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে পৌছে। ইতিপূর্বে একই অভিযোগে গত বছরের ২ জুলাই স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রনালয় উপ-সচিব কামরুন্নাহার বরখাস্তের এ আদেশ দিয়েছিলেন।
এদিকে, একই মামলার অভিযোগে পূর্বের আদেশকৃত বরখাস্তাদেশের বিরুদ্ধে হাইকোর্ট ও সুপ্রিমকোর্টের দেয়া স্থগিতাদেশ অমান্য করে ২য় বারের মতো বরখাস্তের আদেশ দেয়া সম্পূর্ণ বে-আইনি বলে মন্তব্য করেছেন ইউপি চেয়ারম্যানগণ।
বরখাস্তকৃতরা হলেন- লামাকাজী ইউপি চেয়ারম্যান কবির হোসেন ধলা মিয়া, খাজাঞ্চী ইউপি চেয়ারম্যান নিজাম উদ্দিন সিদ্দিকী, অলংকারী ইউপি চেয়ারম্যান লিলু মিয়া, দৌলতপুর ইউপি চেয়ারম্যান আব্বাছ আলী, বিশ্বনাথ ইউপি চেয়ারম্যান জালাল উদ্দিন, দেওকলস ইউপি চেয়ারম্যান তাহিদ মিয়া ও দশঘর ইউপি চেয়ারম্যান শফিক উদ্দিন আহমদ।
জানা গেছে, উপজেলার ৭ ইউপি চেয়ারম্যানকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করার জন্য উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বরাবর লিখিত আবেদন করা হয়। বিশ্বনাথ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সোনামনি চাকমা ২০১২ সালের ১৪ জুন জেলা প্রশাসক বরাবর লিখিত ভাবে এই আবেদন করেন। উক্ত আবেদনের প্রেক্ষিতে ২০১২ সালের ১ জুলাই স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রনালয় (ইউনিয়ন পরিষদ শাখা) উপ-সচিব মোছঃ কামরুন্নাহার বরখাস্তের আদেশ দেন। এরপর ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যনদের কাছে দায়িত্ব হস্তান্তরের আগেই ২০১২ সালের ৪ জুলাই বরখাস্তাদেশ বিরুদ্ধে মহামান্য সুপ্রিম কোর্টের হাই কোর্টের অবকাশকালীন ব্রেঞ্চে ৬ ইউপি চেয়ারম্যানদের দায়েরকৃত পৃথক পৃথক রীটের প্রেক্ষিতে আদালত এই বরখাস্তাদেশ ৩ মাসের জন্য স্থগিতের নির্দেশ প্রদান করেন এবং একই সাথে বরখাস্তাদেশ কেন বাতিল হবে না এই মর্মে ৪ সাপ্তাহের মধ্যে কারণ দর্শানোর জন্য সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের প্রতি আদেশ প্রদান। গত ২০ নভেম্বর আবারও স্থানীয় সরকার পল্ল¬ী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রনালয় (ইউনিয়ন পরিষদ শাখা) উপ-সচিব আবু তাহের মোহাম্মদ জাবের ৭ ইউপি চেয়ারম্যানকে বরখাস্তের আদেশ দেন। গত রবিবার এ আদেশনামাটি মন্ত্রনালয় থেকে সিলেট জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে এসে পৌছে (পত্র নং ৫১)।
আদেশনামায় উল্লে¬খ করা হয়- ইউপি চেয়ারম্যানগনের বিরুদ্ধে বিশ্বনাথ থানায় দঃবিঃ ১৪৭/১৪৮/১৪৯/১৮৬/৩০২/৩০৭/৩৩২/৩৩৩/৩৫৩/৩৭৯/৪২৭/৪৩৬ ধারায় ও আইন শৃঙ্খলা বিঘœকারি অপরাধ (দ্রæত বিচার আইন) ২০০০ (সংশোধনী/১২) এর ৪(১)/৫ ধারায় মামলা রয়েছে। এসব মামলার অভিযোগপত্র বিজ্ঞ আদালত কর্তৃক গৃহিত হওয়ায় তাদেরকে পরিষদের কার্যক্রম পরিচালনা করতে দেওয়া ইউনিয়ন পরিষদ ও জনস্বার্থে সমীচীন নয়। তাই উক্ত চেয়ারম্যানদেরকে স্থানীয় সরকার (ইউনিয়ন পরিষদ) আইন ২০০৯ এর ধারা ৩৪(১) মোতাবেক জনস্বার্থে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে। এ আদেশ অবিলম্বে কার্যকর হবে এবং পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত বলবৎ থাকবে।
এব্যাপারে খাজাঞ্চী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নিজাম উদ্দিন সিদ্দিকী বলেন, গত বছরের ১ জুলাই আমাদের কে সাময়িক বরখাস্তের আদেশ দেওয়া হলে পরবর্তিতে আমরা বরখাস্তাদেশের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে রিট আবেদন করি। ওই আবেদনের প্রেক্ষিতে মহামান্য হাইকোর্ট বরখাস্তের আদেশ ৩মাসের জন্য স্থগিতের নির্দেশ প্রধান করেন। এরপর মহামান্য হাইকোর্টের দেয়া স্থগিতাদেশের বিরুদ্ধে সরকার সুপ্রিমকোর্ট এর এ্যাপিলেড ডিভিশনে নিয়ে যায়। মহামান্য সুপ্রিমকোটও হাইকোর্টের দেয়া স্থগিতাদেশ বহালের আদেশ প্রদান করেন। এরপর স্থগিতাদেশ বাড়াতে আমরা এ্যাপিলেড ডিভিশনে আবেদন করলে আদালত তা বহাল রাখেন এবং এর মেয়াদ ২০১৪ সালের ১ শে নভেম্বর পর্যন্ত। তিনি বলেন, আমরা শুনেছি আদালতের আদেশ অমান্য করে সম্পূর্ণ বে-আইনীভাবে আবারও বরখাস্তের আদেশ দেয়া হয়েছে। এই আদেশের কপি আমাদের হাতে এখনও পৌছেনি। চিটি হাতে পৌছলে আইনগত ব্যবস্থা নেব।
বিশ্বনাথ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সোনামনি চাকমা বলেন, ইউপি চেয়ারম্যানদের বরখাস্তের কোন আদেশ এখনো পরিষদে আসেনি।
No comments:
Post a Comment