এসএ আলাউদ্দীন,ঢাকা : প্রধানমন্ত্রীর সাবেক জনপ্রশাসন বিষয়ক উপদেষ্টা এইচ টি ইমামের বিদায় সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিল জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। আজ রোববার সকাল ১১টায় জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের লাইব্রেরিতে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল। কিন্তু, এখানে যেহেতু ওএসডি কর্মকর্তারা নিয়মিত বসেন তাই তাদের জায়গা বেদখল হওয়ায় তারা ক্ষুব্ধ হন। বাকবিতণ্ডা এবং এক পর্যায়ে সংবর্ধনা অনুষ্ঠান বন্ধ করার জন্য হইচই শুরু করে দেন। এইচ টি ইমাম এবং জনপ্রশাসন সচিব আব্দুস সোবহান সিকদারের সামনেই এসব ঘটে। চরম বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়েন তারা। বলা যায়, অনেকটা নাজেহালই হন এইচ টি ইমাম। এমনকি ওএসডি কর্মকর্তাদের উত্তেজনাকর বাক্যে সাবেক উপদেষ্টার চোখেমুখে ভয়ের রেখাও ফুটে উঠে। এইচ টি ইমামকে এ পরিস্থিতি থেকে উদ্ধার করতে এগিয়ে আসেন জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব সোহরাব হোসাইন। তিনি ওএসডি কর্মকর্তাদের শান্ত করার চেষ্টা করেন এবং তাদের কাছ থেকে এইচ টি ইমামের অনুষ্ঠানের জন্য ১০ মিনিট সময় চেয়ে নেন। অথচ গত পৌনে ৫ বছর এই সাবেক উপদেষ্টার কতই না দাপট ছিল! তার চোখের ইশারায় কত অদক্ষ, অযোগ্য ও দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তার ভাগ্য খুলে গেছে রাতারাতি; আবার কত সৎ, যোগ্য, দক্ষ, নিরীহ কর্মকর্তা নিক্ষিপ্ত হয়েছেন আস্তাকুঁড়ে!
উল্লেখ্য, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের অধীনে যে শ’ শ’ কর্মকর্তা ওএসডি আছেন কাজ না থাকলেও এদের প্রতিদিন সচিবালয়ে এসে মন্ত্রণালয়ে হাজিরা দিতে হয়। কিন্তু, হাজিরা দেওয়ার নিয়ম থাকলেও মন্ত্রণালয়ে এদের বসার কোনো স্থান নেই। তাই এরা লাইব্রেরিতে বসেই সময় কাটান। আর এখানেই আয়োজন করা হয়েছিল এইচ টি ইমামের বিদায় অনুষ্ঠান। তাদের বসার স্থান দখল করে অনুষ্ঠানের আয়োজন করায় ওএসডি কর্মকর্তারা ক্ষুব্ধ হন। এইচ টি ইমামের ওপর প্রশাসনের পদোন্নতি ও পদায়নবঞ্চিত কর্মকর্তাদের ক্ষোভ চরমে। তারই কিছুটা বহিঃপ্রকাশ ঘটিয়েছেন উপস্থিত ওএসডি কর্মকর্তারা। এইচ টি ইমামের মুখের সামনেই এরা সমস্বরে চিৎকার করে বলেন, আমাদের বসার স্থানটিও দখল করে নিতে চান? সোহরাব হোসাইনসহ জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের অনুরোধে ওএসডি কর্মকর্তারা পরে শান্ত হলেও এ অনুষ্ঠানের জন্য শুধুমাত্র ১০ মিনিট সময় দিতে রাজি হন। ওএসডি কর্মকর্তাদের হাতে পুনরায় নাজেহাল হওয়ার ভয়ে ১০ মিনিটেই তড়িঘড়ি করে শেষ করতে হয় সাবেক উপদেষ্টার বিদায় সংবর্ধনা অনুষ্ঠান, যিনি গত পৌনে ৫ বছর এই কর্মকর্তাদের ওপরই ছড়ি ঘুরিয়েছেন।
No comments:
Post a Comment