বিশ্বনাথ উপজেলার ৭ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানকে ২য় বারের মতো বরখাস্ত করার প্রতিবাদে বিশ্বনাথ উপজেলায় আজ বুধবার সকাল-সন্ধ্যা হরতাল আহŸান করেছে উপজেলা ১৮ দলীয় জোট।
এদিকে, অনেক আলোচনা সমালোচনার পর অবশেষে রামপাশা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আনোয়ার খান’কেও করখাস্ত করা হয়েছে। তিনি কয়েক মাস পূর্বে বিএনপি থেকে আওয়ামী লীগে যোগদান করেন। আর আওয়ামীলীগে যোগদানের কারণে ৭ ইউপি চেয়ারম্যানকে ১ম বার বরখাস্ত করা হলেও তখন রক্ষা পেয়ে যান আনোয়ার খান। কিন্ত এবার ২য় বারের মতো উপজেলার ৭ ইউপি চেয়ারম্যানকে বরখাস্তের সাথে সাথে রামপাশা ইউপি চেয়ারম্যান আনোয়ার খানকে ও বরখাস্ত করা হয়েছে।
জানা গেছে, গত ২০ নভেম্বর স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রনালয় (স্থানীয় সরকার বিভাগ, ইউপি-২ শাখা)’র উপ-সচিব আবু তাহের মোহাম্মদ জাবের স্বাক্ষরিত ৪৬.০১৮.০৩২.০০.০০.০২২.১০১৩.৩৭৮ নং স্মারকের মাধ্যমে উপজেলার অন্য সাত ইউপি চেয়ারম্যানের সাথে আনোয়ার খানকেও সাময়িক বরখাস্তের আদেশ প্রদান করা হয়। এরপূর্বে আনোয়ার খান ছাড়া উপজেলার অপর সাত ইউপি চেয়ারম্যানকে ২০১২ সালের ১ জুলাই স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রনালয় (ইউনিয়ন পরিষদ-১ অধিশাখা)’র উপ-সচিব মোছাম্মৎ কামরুন্নাহার স্বাক্ষরিত পৃথক পৃথক স্মারকের মাধ্যমে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছিল।
সাত ইউপি চেয়ারম্যানের পর আনোয়ার খানের বরখাস্তের আদেশনামা গতকাল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে পৌছেছে। আনোয়ার খানের বিরুদ্ধেও ‘সরকারি বিভিন্ন দপ্তরে অগ্নিসংযোগ, ভাংচুর, লুটপাঠ’র অভিযোগে দায়েরকৃত বিভিন্ন ধারায় একাধিক এবং আইন-শৃঙ্খলা বিঘœকারী অপরাধ (দ্রুত বিচার আইন) ২০০০ (সংশোধনী/১২) এর ৪(১)/৫ ধারায় মামলা থাকায় তাকে দিয়ে ‘পরিষদের কার্যক্রম পরিচালনা করতে দেয়া ইউনিয়ন পরিষদ ও জনস্বার্থ সমীচিন নয়’। তাই তাকে স্থানীয় সরকার (ইউনিয়ন পরিষদ) আইন, ২০০৯ এর ৩৪(১) ধারার বিধান মোতাবেক ইউনিয়ন পরিষদ ও জনস্বার্থে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। স্মারকে স্থানীয় সরকার (ইউনিয়ন পরিষদ) আইন ২০০৯ এর ৩৩(৩) ধারা মোতাবেক নির্বাচিত প্যাপনেল চেয়ারম্যান এর মধ্য থেকে একজনকে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান নির্বাচিত করার ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বিশ্বনাথ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে অনুরোধ করা হয়। অত্র আদেশ প্রাপ্তির ৩ দিনের ভিতরে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের কাছে বর্তমান চেয়ারম্যান দায়িত্ব হস্তান্তরের নির্দেশ দেওয়া হয়।
এব্যাপারে, বিশ্বনাথ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সোনামনি চাকমা বলেন, ইতোপূর্বে ২০১২ সালে উপজেলার ৭ ইউনিয়ন চেয়ারম্যানকে বরখাস্ত করা হয়। এরপর ৬ জন চেয়ারম্যান উচ্চ আদালতে রীট দায়ের করলে বরখাস্তের আদেশ স্থগিত করা হয়। এক্সটেটশনের মাধ্যমে স্থগিতাদেশের মেয়ার ২০১৪ সালের ১ শে নভেম্বর পর্যন্ত। উচ্চ আদালতের স্থগিতাদেশের মেয়াদ থাকা সত্তে¡ আবারও ৬ চেয়ারম্যানকে বরখাস্ত করার বিষয়টি আমি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিতভাবে প্রতিবেদন পাঠাবো। তিনি বলেন, দশঘর ইউপি চেয়ারম্যান শফিক উদ্দিন আহমেদকে বরখাস্তের পর থেকে তিনি প্রবাসে অবস্থান করছেন। এছাড়া রামপাশা ইউপি চেয়ারম্যানকে বরখাস্তের আদেশের চিটি আজ আমার কার্যালয়ে পৌছে। নিয়ম অনুযায়ী পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহন করা হবে।
এদিকে, বিএনপি-জামায়াতপন্থী ৭ ইউপি চেয়ারম্যানকে বরখাস্তের প্রতিবাদে আজ বুধবার উপজেলায় সকাল-সন্ধ্যা হরতাল ডাক দিয়েছে উপজেলা ১৮ দলীয় জোট। উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক গৌছ খানসহ আটক নেতাকর্মীর মুক্তির দাবি ও সাত ইউপি চেয়ারম্যাকে অপসারনের প্রতিবাদে বিশ্বনাথ ইউপির ৩ নং জানাইয়া ওয়ার্ড বিএনপির উদ্যোগে গতকাল মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে ৪টায় উপজেলা বিএনপির কার্যালয়ের সামনে প্রতিবাদ সভা অনুষ্টিত হয়। সভা শেষে হরতাল, আটক নেতাকর্মী মুক্তি ও অবরোধের সমর্থনে দলীয় কার্যালয়ের সামন থেকে ১৮ দলীয় জোট বিশাল মিছিল বের করে। মিছিলটি উপজেলা সদরের প্রধান সড়কগুলো প্রদিক্ষণ শেষে আবারও দলীয় কার্যালয়ের সামনে গিয়ে শেষ হয়।
বিএনপি নেতা গনি মিয়ার সভাপতিত্বে ও উপজেলা যুবদলের আহবায়ক আহমদ-নুর-উদ্দিনের পরিচালনায় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন, উপজেলা বিএনপির সভাপতি জালাল উদ্দিন চেয়ারম্যান। বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন উপজেলা জামায়াতের আমীর আবদুল কাইয়ুম, খেলাফত মজলিসের জেলা শাখার সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুল ওদুদ, উপজেলা বিএনপির সহ-সভাপতি মনির হোসেন, সহ-সাধারণ সম্পাদক নাজমুল ইসলাম রুহেল, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মোনায়েম খান, দপ্তর সম্পাদক বশির আহমদ,বিএনপি নেতা সিরাজ খান, ইসমাইল খান,এটি এম নুর উদ্দিন, আরব খান, আবদুল কুদ্দুছ, মতছির আলী, শামিম আহমদ, খেলাফত মজলিসের সভাপতি মাওলানা আবদুল মতিন, সহ-সভাপতি সায়েক আহমদ,সাংগঠনিক সম্পাদক হাবিবুর রহমান, জমিয়তের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাওলানা সামছুল ইসলাম, সাংগঠনিক সম্পাদক হাফিজ মাওলানা সায়েদ আহমদ, ছাত্র জমিয়ত নেতা হাসান বিন ফাুহম, যুবদলের যুগ্ম-আহবায়ক কদর আলী, মুসলিম আলী, নুরুল মিয়া, তাজুল ইসলাম, মোজাহিদ আলী, আবদুল রতিফ, গোবিন্দমালাকার, আবেদুর রহমান আছকির, যুবদল নেতা শানুর আলী, বাদশা মিয়া, আবদুস সত্তার, ইসলাম উদ্দিন, হাসমত আলী, সুন্দর আলী, নিজাম মেম্বার, আব্বাস আলী সুমন, সাইফুর রহমান, আখতার হোসেন, রিপন, মাসুদ,সুমন,শ্রমিকদলের আহবায়ক মনির মিয়া, যুগ্ম-আহবায়ক আবদুর জব্বার, শ্রমিকদল নেতা মাসুক, নুরুজ্জামান, দুদু মিয়া, সেচ্ছাসেবকদলের আহবায়ক কাওছার খান,যুগ্ম-আহবায়ক ইউসুফ খান আখতার, নুরুজ্জামান, তাজ উদ্দিন আহমদ কিনু, শাহিন তালুকদার, উপজেলা ছাত্রদলের আহবায়ক শামছুল ইসলাম, যুগ্ম-আহবায়ক আলাল আহমদ, আবদুল কাইয়ুম, তারেক আহমদ খজির, মনির আলী, বিশ্বনাথ ডিগ্রি কলেজ ছাত্রদলের আহবায়ক মানিক মিয়া প্রমুখ।
No comments:
Post a Comment