আমাদের সিলেট ডটকম:
আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে সিলেটের জৈন্তাপুর উপজেলায় অনুষ্ঠিত উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে শেষ মূহূর্তে জমে উঠেছে নির্বাচনী প্রচার প্রচারণা। সময় যত ঘনিয়ে আসছে নির্বাচনী প্রচার প্রচারনা তত জমে উঠেছে। নির্বাচনকে ঘিরে পুরো উপজেলা জুড়ে এক উৎসব মূখোর পরিবেশ বিরাজ করছে। ভোটারসহ সব শ্রেণী পেশার মানুষের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনা দেখা দিয়েছে।
সিলেটের সীমান্তবর্তী জৈন্তাপুর উপজেলার প্রতিটি পাড়া মহল্লায় চেয়ারম্যান, মহিলা ও পুরুষ ভাইস-চেয়ারম্যানগণের নানা রকম পোষ্টার, লিফলেট ও ব্যানারে ছুয়ে গেছে। প্রার্থীরা শীত ও হালকা বৃষ্টি উপেক্ষা করে সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত প্রতিটি গ্রামে গ্রামে তাদের নির্বাচনী প্রচার প্রচারনা ও উঠান বৈঠক চালিয়ে ভোটারদের মন জয় করার চেষ্টা করছেন। উপজেলার অফিস পাড়া, হাটবাজার চা-দোকান গ্রাম গঞ্জে সহ সর্বত্র এলাকায় নির্বাচনী আমেজ ছড়িয়ে পড়েছে। আলোচনার একটি মাত্র বিষয়ে কে হচ্ছেন? উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান। শেষ মুহূর্তে নির্বাচনী প্রচারনায় ব্যস্ত সময় অতিবাহিত করছেন প্রার্থীরা। সিলেটের প্রাচীন জনপদ হিসাবে পরিচিত জৈন্তাপুর উপজেলা। এখানে রয়েছে প্রাকৃতিক খনিজ সম্পদ, তৈল, গ্যাস, বালু, পাথর, চা-বাগান, জলমহাল সহ মৎস্য সম্পদ ভরপুর। এসব প্রাকৃতিক খনিজ সম্পদ দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে রাখছে বিরাট অবদান।
এছাড়া রয়েছে হাজার বছরের অতীত গৌরব উজ্জল ইতিহাস। রয়েছে প্রাচীন পুরার্কীতি আর মেগালিথিক পাথর যা এই অঞ্চলের ঐহিত্যকে ধারণ করে আছে। স্বাধীনতার ৪২ বছরেও জৈন্তাপুরের মানুষের প্রত্যাশিত উন্নয়ন সাধিত হয়নি। ব্যাপক সম্ভাবনাময় জনপদ হিসাবে পরিচিত থাকলেও এখানে রয়েছে সমস্যার পাহাড়। তবে বিগত সময়ে বিভিন্ন ইউনিয়ন ও উপজেলা পরিষদে নির্বাচনে তরুন নেতৃত্ব সৃষ্টি হওয়াতে সামগ্রিক ভাবে জৈন্তাপুর উপজেলা শিক্ষা, যোগাযোগ, স্বাস্থ্য ও সাংস্কৃতিক চর্চার ক্ষেত্রে অনেক অগ্রসরমান হয়েছে। এখানে বসবাসরত জনসাধারনের মধ্যে বেশীর ভাগ হচ্ছেন শ্রমজীবী মানুষ, আছেন আলেম-উলামেয় কোরাম এবং নৃতাত্তি¡ক জনগোষ্ঠী ও চা-শ্রমিক। ২৬৬.৭৭ বর্গকিলোমিটার আয়তনের এই জনপদে মোট লোক সংখ্যা ১ লক্ষ ৬১ হাজার, ৭শ’ ৪২ জন রয়েছেন।
আগামী ১৯ ফেব্র“য়ারি নির্বাচন কে সামনে রেখে চেয়ারম্যান, মহিলা ও পুরুষ ভাইস-চেয়ারম্যানরা উপজেলার প্রত্যান্ত এলাকায় গণসংযোগ, মতবিনিময় ও বিভিন্ন পথসভায় উপস্থিত হয়ে ভোটার ও জনসাধারনের কাছে নিজের অবস্থান তুলে ধরছেন। এবারের উপজেলা নির্বাচনে ১৯ জন প্রার্থী নির্বাচনী মাঠে রয়েছেন। চেয়ারম্যান পদে ৩জন, মহিলা ভাইস-চেয়ারম্যান পদে ৭জন, পুরুষ ভাইস-চেয়ারম্যান পদে ৯জন প্রার্থী নির্বাচনী লড়াইয়ে অবর্তীন হয়েছেন।
চেয়ারম্যান পদে বর্তমান উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও ১৯ দলীয় জোটের সমর্থিত প্রার্থী আলহাজ্ব মো: জয়নাল আবেদীন (দোয়াত কলম), উপজেলা আওয়ামীলী সভাপতি ও দলীয় সমর্থিত প্রার্থী সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আলহাজ্ব মো: আব্দুল্লাহ (আনরাস) ও সাবেক ছাত্রনেতা বাংলাদেশ ইউনিয়ন ফোরাম কেন্দ্রীয় কমিটির প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ও দরবস্ত ইউনিয়ন পরিষদের জনপ্রিয় চেয়ারম্যান কামাল আহমদ (ঘোড়া) প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করছেন। মহিলা ভাইস-চেয়ারম্যান পদে আওয়ামীলীগ সমর্থিত বর্তমান মহিলা ভাইস-চেয়ারম্যান শ্রী জয়মতি রানী (সেলাই মেশিন), ১৯ দলীয় জোটের সমর্থিত প্রার্থী মোছা: আয়শা ইসলম (বৈদ্যুতিক পাখা), সুফিয়া কামাল চৌধুরী (হাসঁ), তসলিমা বেগম (পদ্মফুল), শিরিন আক্তার (ফুটবল), আয়শা খাতুন (কলস) ও মোছা: আয়শা সিদ্দিকা পারুল (প্রজাপতি) প্রতীক পেয়েছেন। পুরুষ ভাইস-চেয়ারম্যান পদে সাবেক ছাত্রনেতা আওয়ামীলীগ সমর্থিত প্রার্থী সিরাজুল ইসলাম (জাহাজ), ১৯ দলীয় জোটের সমর্থিত প্রার্থী ও উপজেলা ছাত্রদলের সভাপতি ফারুক আহমদ (তালা), এডভোকেট আলতাফ হোসেন (টিয়া পাখি), সাংবাদিক মুজিবুর রহমান ডালিম (বই), মাওলানা কবির আহমদ (চশমা), মো: এবাদ উলাহ (উড়োজাহাজ), মো: বশির উদ্দিন (মাইক), মো: বুরহান আহমেদ (টিউবওয়েল) ও মো: আব্দুর রব (বৈদ্যুতিক বাল্ব) প্রতীক নিয়ে নির্বাচনী মাঠে লড়াই করছেন।
উপজেলার মোট ভোটার সংখ্যা ৯০ হাজার ২শত ৬৫জন। পুরুষ ৪৫ হাজার ৫শত ২২জন আর মহিলা ৪৪ হাজার ৭শত ৪৩জন রয়েছেন। উপজেলার ৬টি ইউনিয়নে মোট ৩২ টি ভোট কেন্দ্র রয়েছে। বুথ সংখ্যা ২৬৩টি। প্রিজাইডিং অফিসার ৩২জন, সহকারী ২৬৩জন, পোলিং অফিসার ৫২৬জন। চেয়ারম্যান পদে ৩ প্রার্থীর মধ্যেই প্রতিদ্ব›দ্বতা হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। দরবস্ত ইউনিয়নে শক্তিশালী দুই প্রার্থী প্রতিদ্ব›িদ্বতা করছেন বর্তমান উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আলহাজ্ব মো: জয়নাল আবেদীন ও দরবস্ত ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান কামাল আহমদ। ফতেপুর ইউনিয়নে একক ভাবে আওয়ামীলীগ সমর্থিত প্রার্থী আলহাজ্ব মো: আব্দুলাহ রয়েছেন। মহিলা ভাইস-চেয়ারম্যান পদে ফতেপুর ইউনিয়ন থেকে শ্রী জয়মতি রানী, চিকনাগুল থেকে আয়শা সিদ্দিকা পারুল, দরবস্ত থেকে আয়শা ইসলাম, চারিকাটা থেকে সুফিয়া কামাল চৌধুরী, জৈন্তাপুর থেকে আয়শা খাতুন একক ভাবে প্রতিদ্ব›দ্বতা করছেন এবং নিজপাট থেকে শিরিন আক্তার ও তসলিমা বেগম প্রতিদ্ব›দ্বতা করছেন। পুরুষ ভাইস-চেয়ারম্যান পদে ফতেপুর ইউানিয়ন থেকে ফারুক আহমদ ও মো: বশির উদ্দিন, দরবস্ত থেকে এডভোকেট আলতাফ হোসেন, মুজিবুর রহমান ডালিম, মাওলানা কবির আহমদ, মো: এবাদ উল্লাহ, নিজপাট থেকে সিরাজুল ইসলাম, মো: আব্দুর রব প্রতিদ্ব›দ্বতা করছেন। জৈন্তাপুর ইউনিয়ন থেকে একমাত্র বুরহান আহমেদ একক ভাবে প্রতিদ্ব›দ্বতা করছেন।
তৃতীয় উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে বিগত ২০০৯ সালের ২২শে জানুয়ারি অনুষ্ঠিত নির্বাচনে ১৭ হাজার ১শত, ৪১ ভোট পেয়ে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছিলেন আলহাজ্ব মো: জয়নাল আবেদীন। ১৩ হাজার, ১শত ১১টি ভোট পেয়ে দ্বিতীয় হয়েছেন উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি আলহাজ্ব মো: আব্দুলাহ। তখন ৫জন প্রার্থী নির্বাচনে প্রতিদ্ব›দ্বিতা করেছিলেন। ১৯ ফেব্র“য়ারির নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে ৩জন প্রার্থী মাঠে রয়েছেন। নির্বাচনের আর মাত্র ২দিন সময় বাকি রয়েছে। শেষ মুর্হুতে চেয়ারম্যান পদে কে নির্বাচিত হবেন সঠিক ভাবে বলা যাচ্ছেনা তবে লড়াই হবে দুই তরুনের মধ্যে হাড্ডাহাড্ডি বলে ধারনা করা হচ্ছে।
আলহাজ্ব মো: জয়নাল আবেদীন : তিনি বর্তমান উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান থাকার সুবাধে এবং ১৯ দলীয় জোটের সমর্থিত একক প্রার্থী হওয়ার ফলে পুরো উপজেলায় তাহার নিজস্ব একটি ভোট ব্যাংক রয়েছে। বিগত ৫ বছরে তিনি পিছিয়েপড়া জৈন্তাপুরের শিক্ষা, যোগাযোগ ও স্বাস্থ্য খাতে ব্যাপক উন্নয়ন মুলক কাজ বাস্তবায়ন করেছেন। প্রশাসন সহ সর্বমহলে তিনি একজন সত ও মেধাবী জনপ্রতিনিধি হিসাবে তার ব্যক্তিগত একটা ইমেজ রয়েছে। জৈন্তাপুর কে একটি আলোকিত ও সমৃদ্ধশালী উপজেলা গঠনে তিনি সর্বদায় নিরলস ভাবে কাজ করছেন। তথ্য প্রযুক্তির বিশ্বে বর্তমান নতুন প্রজন্মের ভোটারাও চান একজন তরুন নেতৃত্ব জৈন্তাপুর কে এগিয়ে নেন। গত নিবার্চনে তিনি দরবস্ত ইউনিয়নের সবকটি ভোট কেন্দ্রে একক ভাবে শতকার ৯০% ভোট পাওয়ায় তার বিজয় অনেকটা সহজ হয়েছিল। এবার দরবস্ত ইউনিয়ন থেকে বর্তমান চেয়ারম্যান কামাল আহমদ শক্তিশালী প্রতিপক্ষ হওয়ার কারনে মো: জয়নাল আবেদীনকে নির্বাচনী লড়াইয়ে উত্তির্ণ হতে কিছুটা কঠিন হবে বলে মনে করা হচ্ছে। তবে ১৯দলীয় জোটের সমর্থিত একক প্রার্থী হওয়ায় পুরো উপজেলায় বিএনপি ও তাহার সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মী এবং জামায়াতের নেতাকর্মীগণ মাঠে সক্রিয় রয়েছেন। শেষ মূর্হুতে তাহার বিজয়ী হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে অনেক সচেতন নাগরিক মনে করছেন।
মোহাম্মদ আব্দুলাহ : উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও দলীয় সমর্থিত প্রার্থী হওয়ার ফলে উপজেলার প্রতিটি এলাকায় দলীয় ভোটার রয়েছেন। জৈন্তিয়া ১৭ পরগনা সালিশ সমন্বয় কমিটির একজন অন্যতম মুরবক্ষী হিসাবে তাঁর ব্যক্তিগত ইমেজ রযেছে। তিনি দীর্ঘদিন ফতেপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হিসাবে দায়িত্বে ছিলেন। ১৯৯১ সালে তিনি জৈন্তাপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছিলেন। একজন সত নীতিবান মানুষ হিসাবে সমাজে ব্যাপক পরিচিতি রয়েছে। তবে সাবেক ছাত্রলীগ নেতা দরবস্ত ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান কামাল আহমদ নির্বাচনী মাঠে থাকায় দলীয় ভোট দুটি ভাগে ভাগ হয়ে গেছে। আওযামীলীগ ও তার সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা দুটি ভাগে বিভক্ত হয়ে পড়েছেন। তবে শেষ মূর্হুতে দলের সিনিয়র নেতৃবৃন্দ মাঠে নামায় তিনি কিছুটা এগিয়ে যাচ্ছেন।
কামাল আহমদ : একজন তরুন জনপ্রতিনিধি হিসাবে পুরো উপজেলা জুড়ে রয়েছে তার ব্যাপক পরিচিতি। এলাকার যে কোন সমস্যা দেখা দিলে তিনি সামনে ছুটে যান। উপজেলার বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডেও রয়েছে তারঁ ব্যাপক সম্পৃক্ততা। দরবস্ত ইউনিয়নের চেয়ারম্যান হিসাবে কামাল আহমদ বিগত ২০০৩ সাল থেকে এখন পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করে আসছেন। পুরো উপজেলার মধ্যে তিনি খুবই জনপ্রিয় হওয়ায় ২০১১ সালের ৮ই জুন পূনরায় বিপুল ভোটে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। তিনি ২০০৯ সালে সিলেট বিভাগীয় শ্রেষ্ঠ চেয়ারম্যান মনোনীত হয়েছিলেন। বর্তমান সংসদ সদস্য ইমরান আহমদের অত্যন্ত øেহভাজন হওয়াতে তিনি সহজে দরবস্ত ইউনিয়ন পরিষদের আধুনিক মানের কমপ্লেক্স ভবন নির্মাণ করতে সক্ষম হয়েছেন। এ কারনে দরবস্ত ইউনিয়নে তার ব্যক্তিগত একটা গ্রহন যোগ্যতা রয়েছে। উপজেলা নির্বাচন কে সামনে রেখে তিনি বিগত এক বছর আগ থেকেই নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতি নেয়ার ফলে পুরো উপজেলার তৃণমুল পর্যায়ের জনসাধারনের কাছে পরিচিতি লাভ করেন। দলের তৃনমুল পর্যায়ের একটি শক্তিশালী অংশ তাঁর সাথে নির্বাচনী মাঠে সক্রিয় রয়েছেন। অপরদিকে জৈন্তাপুর উপজেলার মুক্তিযোদ্ধাগণ, মুক্তিযোদ্ধা চেতনা বাস্তবায়ন মঞ্চের ব্যানারে কামাল আহমদের পক্ষে মাঠে নামায় নির্বাচনে নতুন মেরুকরণ দেখা দিয়েছে। তিনি বিভিন্ন পথসভায় বক্তব্য দিয়ে নতুন প্রজন্মের ভোটারদের মন ও হৃদয় জয় করার প্রাণবন্ত চেষ্টা করছেন। মুলত: তারঁ ব্যক্তিগত জনপ্রিয়তার কারনে নির্বাচনী জনস্রত অনেকটা তারঁ পক্ষে রয়েছে। শেষ মূর্হুতে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়ে কে হাসবেন বিজয়ের হাসি তা সময়েই বলে দেবে।
অন্যদিকে মহিলা ভাইস-চেযারম্যান পদে শ্রী জয়মতি রানী, মোছা: আয়শা ইসলাম, সুফিয়া কামাল চৌধুরী ও আয়শা খাতুন ও তসলিমা বেগন (রিনা) ভোটারদের নিকট আলোচনায় এগিয়ে আছেন। পুরুষ ভাইস-চেয়ারম্যান পদে সিরাজুল ইসলাম, ফারুক আহমদ, মুজিবুর রহমান ডালিম, বশির উদ্দিন ও বুরহান আহমেদ ভোটারদের নিকট আলোচনায় রয়েছেন।
শেষ মূর্হূতে জৈন্তাপুরে জমে উঠেছে নির্বাচনী প্রচারণা
Sunday, February 16, 2014
Labels:
# আমাদের সিলেট
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
No comments:
Post a Comment