সংসদীয় আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় প্রার্থীকে নির্বাচিত ঘোষণার গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের বিধান কেন অবৈধ ও সংবিধান পরিপন্থি ঘোষণা করা হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছে হাইকোর্ট। মন্ত্রিপরিষদ সচিব, আইন সচিব, প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও নির্বাচন কমিশন সচিবকে ১০ দিনের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে। বিচারপতি মির্জা হোসেইন হায়দার এবং বিচারপতি মুহাম্মদ খুরশীদ আলম সরকারের হাইকোর্ট বেঞ্চ গতকাল এ রুল জারি করে। গত বছরের ১৭ই ডিসেম্বর জাতীয় পার্টির ভাইস চেয়ারম্যান খন্দকার আবদুস সালাম রিট আবেদনটি দায়ের করে। প্রাথমিক শুনানি শেষে এ নিয়ে রুল জারি করলো হাইকোর্ট। রিট আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার হাসান এম এস আজিম। শুনানিতে তিনি বলেন, গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের ১৯ ধারা অনুসারে, মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাইয়ের পর বা মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের পর একক প্রার্থী থাকলে তাকে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত ঘোষণা করা যায়। এক্ষেত্রে ‘না’ ভোটের কোন বিধান রাখা হয়নি। অথচ সংবিধান স্পষ্ট বলছে, জনগণের ভোটে নির্বাচিত প্রতিনিধিদের নিয়ে সংসদ গঠিত হবে। জনগণের ভোটাধিকার প্রয়োগ ছাড়া কাউকে নির্বাচিত ঘোষণা করা সংবিধানের পরিপন্থি। শুনানি শেষে রুল জারি করে হাইকোর্ট। রিট আবেদনে বলা হয়, গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের ১৯ ধারা সংবিধানের ৭, ১১, ২৭, ৩১, ৬৫ (২), ১২১ ও ১২২ (২) অনুচ্ছেদের পরিপন্থি। সংবিধানের ৭ অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, ‘প্রজাতন্ত্রের সকল ক্ষমতার মালিক জনগণ; এবং জনগণের পক্ষে সেই ক্ষমতার প্রয়োগ কেবল এই সংবিধানের অধীন ও কর্তৃত্বে কার্যকর হইবে।’ সংবিধানের ৬৫(২) অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, ‘একক আঞ্চলিক নির্বাচনী এলাকাসমূহ হইতে প্রত্যক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে আইনানুযায়ী নির্বাচিত তিন শত সদস্য লইয়া এবং এই অনুচ্ছেদের (৩) দফার কার্যকরতাকালে উক্ত দফায় বর্ণিত সদস্যদিগকে লইয়া সংসদ গঠিত হইবে; সদস্যগণ সংসদ সদস্য বলিয়া অভিহিত হইবেন।’ ১২২(১) অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, ‘প্রাপ্তবয়স্কের ভোটাধিকারভিত্তিতে সংসদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হইবে।’ প্রসঙ্গত, ৫ই জানুয়ারির নির্বাচনে ১৫৪ আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় প্রার্থীরা নির্বাচিত হয়েছেন। এ নিয়ে দেশ-বিদেশে বিতর্ক চলছে। আন্তর্জাতিক সমপ্রদায় বলছে, নির্বাচনে বাংলাদেশের জনগণের মতামতের সত্যিকার প্রতিফলন হয়নি।
No comments:
Post a Comment