বেনাপোল বলফিল্ডে সারি সারি লাশ দেখে চোখের জল ধরে রাখতে পারেনি কেউ
ইয়ানুর রহমান, শার্শা : যশোরের বেনাপোল বলফিল্ডে সারি সারি রাখা সাদা কাপড়ের মোড়ানো ৭টি শিশুর লাশ দেখে চোখের জল কেউ ধরে রাখতে পারেনি। কেউ কেঁদেছে হাউমাউ করে আবার কেউ কেঁদেছে নীরবে। অনেকে দীর্ঘক্ষণ ধরে নির্বাক তাকিয়ে ছিল নিষ্পাপ মুখগুলোর দিকে। চোখ যেন সরছিল না। অন্যদিকে নিহতদের বাড়িতে চলছে শোকের মাতম। এ মাতম যেন থামবার নয়। বেনাপোলের ছোট আঁচড়া, নামাজ গ্রাম ও গাজিপুর যে শোকের চাদরে ঢাকা পড়েছে।
সুরাইয়া আক্তার আর জেবা আক্তার দুই বোন। প্রঞ্চম শ্রেণির ছাত্রী সুরাইয়া ও তৃতীয় শ্রেণির ছাত্রী জেবা বেনাপোলের ছোট আঁচড়া গ্রামে নানা বাড়ি থেকে লেখাপড়া করতো। মা হারা দুবোন একসঙ্গেই চলে গেলো না ফেরার দেশে-হয়তো মায়ের কাছে। স্ত্রীর মৃত্যুর আড়াই বছর পর দুই সন্তান হারিয়ে নির্বাক বাবা সৈয়দ আলী। মুখ দিয়ে কোন শব্দ বের হচ্ছে না।
নিহত দুই সহোদরার নানী নূরুন্নাহার বেগম কাঁদতে কাঁদতে জানান, পিকনিকে যাবার সময় বলেছিল, নানু যাচ্ছি, দোয়া করবেন। এই যাওয়া যে শেষ যাওয়া হবে তা জানতে পারলে যেতে দিতাম না।
পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রী মিথিলার বাবা ছোট আঁচড়া গ্রামের ইউনুস আলী জানলেন, মিথিলা ছিল বাড়ির সকলের চোখের মণি। হঠাৎ করেই সে সবার চোখের আড়াল হয়ে গেলো। এ কথা বলেই তিনি চিৎকার করে কেঁদে উঠলেন।
রবিবার ১৬ ফেব্রুয়ারি বেলা ২টায় বেনাপোল বলফিল্ডে নিহত ৭ শিশুর দুটি নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। এতে ২০ সহস্রাধিক মানুষ অংশ নেন। এরপর নিজ নিজ গ্রামে তাদের দাফন করা হয়েছে।
No comments:
Post a Comment