আমাদের সিলেট ডটকম:
পৌর এলাকার শহীদ টিলার পুলিশ পরিচয়ে দু’টি বাড়ীতে দুর্ধর্ষ ডাকাতি সংঘটিত হয়েছে।
ডাকাতদের হামলায় কয়েকজন গুরুতর আহত হয়েছেন। এদের মধ্যে কানাডা প্রবাসী গৃহকর্তা আবু বক্করকে গুরুতর আহত অবস’ায় সিলেট ওসমানী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এ সময় ডাকাতদল নগদ টাকা, স্বর্ণালংকারসহ প্রায় ৩০ লাখ টাকার মালামাল লুট করে পালিয়ে যায়।
এদিকে খবর পেয়ে তাৎক্ষনিক পুলিশ ঘটনাস’লে পৌঁছে জনতার সহায়তায় ২ ডাকাতকে আটক করে। পরে আটককৃতদের স্বীকারোক্তিতে আরো এক ডাকাতকে আটক করা হয়। পুলিশ জানিয়েছে, আটক ডাকাতদের কাছ থেকে গুলি, ডাকাতি কাজে ব্যবহৃত যন্ত্রপাতি ও লুন্টিত কিছু মালামাল উদ্ধার করা হয়েছে। ডাকাতির ঘটনায় মঙ্গলবার মধ্যরাতে আব্দুল মতলিব বাদী হয়ে থানায় মামলা করেছেন।
জানা যায়, গত সোমবার দিবাগত রাত সাড়ে ৩ টায় কানাডা প্রবাসী আবু বক্কর ও আব্দুল মতলিবের বাড়ীতে ১৫/২০ জনের ডাকাতদল গ্রীল কেটে এবং দরজা ভেঙ্গে ঘরে প্রবেশ করে। ডাকাতদল পুলিশ পরিচয় দিয়ে ঘুমন্ত গৃহকর্তাসহ পুরুষ-মহিলা ও শিশুদের ঘুম থেকে তুলে বাথরুমে আটকিয়ে রেখে ঘরের আলমিরাসহ সকল স্থানে তল্ল্লাশী করে নগদ টাকা, স্বর্নালংকারসহ মূল্যবান জিনিসপত্র লুট করে। আবু বক্করের পারিবারিক সূত্র জানিয়েছে, পুলিশ পরিচয় দিয়ে ঘরের সকলকে জিম্মি করে ফেলে। এ সময় গৃহকর্তা আবু বক্কর তাদের আচরণ লক্ষ্য করে চিৎকার শুরু করলে ডাকাতদল তাকে দা দিয়ে কুপিয়ে মারাত্মক জখম করে। তার মাথায় ও শরীরের বিভিন্ন স’ানে জখম রয়েছে। বর্তমানে তিনি সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। সূত্রমতে, ডাকাতদল আবু বক্করের ঘর থেকে নগদ ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা, ২২/২৩ ভর্তি স্বর্নালংকার, মোবাইল সেটসহ মূল্যবান জিনিসপত্র নিয়ে যায়। একই সময়ে ডাকাতদল পাশ্ববর্তী বাড়ীর আব্দুল মতলিবের ঘরে হানা দেয়। আব্দুল মতলিব জানিয়েছেন, ১৫/২০ জনের ডাকাতদল দুটি ভাগে বিভক্ত হয়ে ডাকাতি করে। ডাকাতদল তার ঘর থেকে ১১ ভরি স্বর্নালংকার, নগদ টাকাসহ প্রায় ৬ লাখ টাকার মালামাল নিয়ে যায়। ডাকাতদল তাদেরকে বেঁধে বাথরুমে আটকিয়ে রাখে। তারা চিৎকার না করায় তাদের উপর হামলা হয়নি বলে তিনি জানান।
এদিকে, ডাকাত প্রবেশের খবর মোবাইল ফোনে পাশ্ববর্তী বাড়ীতে জানানো হলে এলাকাবাসী ডাকাত প্রতিরোধে বেরিয়ে পড়েন। খবর পেয়ে থানা পুলিশের একটি দল ডাকাত ধরতে সাথে সাথে ঘটনাস’লে পৌঁছে। এ সময় ডাকাতদল ডাকাতি শেষে দুটি বাড়ী থেকে বেরিয়ে পড়ে। থানা পুলিশের কনস্টেবল রাকিব উদ্দিনের সাহসী ভূমিকা ও জনতা ডাকাতদের ধরতে তাদের পিছু ধাওয়া করে। এ সময় পুলিশ ও ডাকাতদের মধ্যে ২ রাউন্ড গুলি বিনিময় হয়।
এ ব্যাপারে বিয়ানীবাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদ সাংবাদিকদের জানান, বিয়ানীবাজার পৌর এলাকার পূর্ব খাসা গ্রামে আবু বকর ও আব্দুল মতলিবের বাড়ীতে ডাকাতি শেষে পালিয়ে যাওয়ার সময় থানা পুলিশের মুখোমুখি হলে ডাকাতরা পুলিশকে লক্ষ্য গুলি ছুড়লে পুলিশও দুই রাউন্ড গুলি করে। এ সময় পুলিশ জৈন-াপুর উপজেলার বিড়াখাই গ্রামের মৃত ইয়াছিন আলীর পুত্র শামিম (২৮), বড়লেখা উপজেলার বুড়ারগুল গ্রামের মৃত ফয়জু মিয়ার পুত্র সেজু ওরফে সাজু ও বিয়ানীবাজার উপজেলার তাজপুর গ্রামের মড়াই মিয়ার পুত্র বেলালকে গ্রেফতার করে। তাদের কাছ থেকে দুটি মোবাইল সেট, দুটি স্বর্ণের চেইন, চুড়ি ৩টি, ব্রেসলেট ১টি, গলার হার ১টি, কানের দুল ২টি, নগদ ১১৩৫ টাকা, ১টি কাটার, ১টি ছোরা, ২ রাউন্ড বন্দুকের গুলি, ৩টি রামদা, ২টি চাকু ও ২টি মানকি ক্যাপ উদ্ধার করে।
ডাকাতির ঘটনায় জড়িত অপর ডাকাতদেরও গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে বলে জানান ওসি আবুল কালাম আজাদ। তিনি বলেন, গ্রেফতারকৃত ৩ ডাকাতকে আজ বুধবার আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে প্রেরণ করা হবে।
বিয়ানীবাজারে পুলিশের সাথে ডাকাতদের গুলিবিনিময়: ৩০ লক্ষাধিক টাকার মালামাল লুট গৃহকর্তা গুরুতর আহতঃ ৩ ডাকাত আটক
Tuesday, December 31, 2013
Labels:
# আমাদের সিলেট
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
No comments:
Post a Comment