এমদাদুর রহমান মিলাদ: ১০ম জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সিলেট-২ আসনে চলছে শেষ হিসেব নিকাশ। এরই মধ্যে ওই আসনের বিশ্বনাথ উপজেলার বেশ কয়েকটি ভোট কেন্দ্রের আশপাশে গতকাল শনিবার সন্ধ্যার পর থেকে প্রায় অর্ধ শতাধিক ককটেল বিষ্ফোরণ ও শুক্রবার গভীর রাতে ১টি কেন্দ্রে অগ্নি সংযোগ করে আতঙ্ক সৃষ্টি করার খবর পাওয়া গেছে। তবে ককটেল বিষ্ফোরণ ও অগ্নি সংযোগ এর ঘটনায় হতাহতের কোন খবর পাওয়া যায়নি।
এদিকে, ভোটকেন্দ্রে আগুন ও ককটেল বিষ্ফোরণের ঘটনায় দায়ী আ’লীগ দলীয় এমপি শফিকুর রহমান চৌধুরীকে দায়ী করেছেন স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী মুহিবুর রহমান। গতকাল শনিবার দুপুরে তিনি এমপি শফিকুর রহমান চৌধুরী ও তার অনুসারীদের দায়ী করে জেলা প্রশাসক ও জেলা রিটানিং কর্মকর্তার বরাবরে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
অপরদিকে,গতকাল সন্ধ্যার পর থেকে উপজেলার বিভিন্ন স্থানে ককটেল বিস্ফোরণের ফলে এলাকার ভোটার ও জনসাধারনের মাঝে বিরাজ করছে উদ্বেগ-উৎকন্ঠা।
জানা গেছে, শুক্রবার গভীর রাতে উপজেলার খাজান্সি ইউনিয়নের চন্দ্রগ্রাম প্রাথমিক বিদ্যালয়ের (ভোট কেন্দ্র) পাশে ২টি ককটেল বিষ্ফোরণ ও রামপাশা ইউনিয়নের পুরানগাঁও প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে অগ্নি সংযোগের চেষ্টা করা হয়। এছাড়া গতকাল শনিবার সন্ধ্যার পর থেকে রাত ১১টায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত উপজেলার বেশ কয়েকটি স্থানে ভোট কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকায় প্রায় অর্ধ শত ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে বলে স্থানীয় সূত্রে জানা যায়। বিভিন্ন সূত্রে যে সকল স্থানে ককটেল বিস্ফোরণের খবর পাওয়া গেছে- উপজেলার লামাকাজী ইউনিয়নের লামাকাজী বাজার পয়েন্টে, হাজরাই, দোকানীপাড়া, মির্জারগাঁও, খাজাঞ্চী ইউনিয়নের খাজাঞ্চী ষ্টেশন বাজার, রাজাগঞ্জ বাজার, চন্দ্রগ্রাম, চারিগ্রাম, নোয়ারাই, কান্দিগ্রাম, তেলিকুনা, বাওনপুর, ছহিফাগঞ্জ বাজার, তালিবপুর, বন্দুয়া, অলংকারী ইউনিয়নের রামপুর বাজার, বড়খুরমা, বেতসান্দি, লালটেক, অলংকারী, টেংরা, টুকেরকান্দি, রামপাশা ইউনিয়নের রামপাশা পয়েন্ট, আমতৈল, বৈরাগী বাজার, ইলামেরগাঁও, কাদিপুর, দৌলতপুর ইউনিয়নের সিংরাঅলি, সিঙ্গেরকাছ বাজার, কড়পাড়া, হাবড়া বাজার, মৌলভীরগাঁও, দৌলতপুর, দশপাইকা বাজার।
জেলা প্রশাসক ও জেলা রিটানিং কর্মকর্তার বরাবরে লিখিত অভিযোগে মুহিবুর রহমান উলেৱখ করেছেন, ‘লাঙ্গল’ প্রতিক নিয়ে তার প্রতিদ্বন্ধী প্রার্থী ইয়াহইয়া চৌধুরীর পক্ষ অবলম্বনকারী বর্তমান সংসদ সদস্য শফিকুর রহমান চৌধুরী ও তাহার কতিপর সহচর নির্বাচনে নিশ্চিত পরাজয় দেখে অবৈধ পন্থায় তার (মুহিব) বিজয় ছিনিয়ে নেওয়ার পায়তারা করছেন। তারা বিশ্বনাথ উপজেলায় বেশ কিছু কেন্দ্র হতে ভোটারদের বিতাড়িত করে ও ককটেল বোমা ফাটিয়ে ভোটারদের মধ্যে ভিতি সৃষ্টি করে টেবিল কাষ্টিংয়ের পরিকল্পনা করছে। তিনি আরো উলেৱখ করেন এমপি শফিক চৌধুরীর সহচরদের অন্যতম আ’লীগ নেতা পংকি খান বিএনপির উপজেলা সাধারণ সম্পাদক থাকাকালীন সময়ে ২০০১ সালে হরমুজ আলীকে হত্য করে আমার উপর দোষ চাপিয়ে লাশ নিয়ে মিছিল করে আমার বিজয় ছিনিয়ে নেন। লাশের রাজনীতি বা নাশকতার রাজনীতির সাথে তিনি (পংকি খান) আগে থেকেই অভিজ্ঞ। তাই পংকি খান সাংসদ শফিক চৌধুরীর আস্থাবাজন ও ঘনিষ্টজন হওয়ায় তারই পরামর্শে শফিক চৌধুরী মরিয়া হইয়া নাশকতার মাধ্যমে আমার বিজয় ছিনিয়ে নেওয়ার পায়তারা করছেন।
এব্যাপারে আওয়ামী লীগ নেতা পংকি খান বলেন, আমি সব সময় শান্তির পৰে কাজ করি এবং আমি বিশ্বনাথে শান্তি চাই। লাশের রাজনীতি মুহিবুর রহমান নিজেই করেন। আমি আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থীর পৰে কাজ করছি। এজন্য মুহিব নির্বাচনে ভোট কম পাবেন দেখে তাই তিনি দেওলিয়া হয়ে আমার বিরুদ্ধে কথা বলছেন।
বিশ্বনাথ থানার অফিসার ইন-চার্জ মো. রফিকুল হোসেন জানান, শীত নিবারনের জন্য খড় দিয়ে আগুন এর তাপ নিয়েছে লোকজন। ভোট কেন্দ্রে আগুন দিয়ে স্কুল পুড়িয়ে দেয়ার বিয়টি সঠিক নয়। তিনি বলেন আমিও শুনেছি বিভিন্ন স্থানে ককটেল বিস্ফোরনের ঘটনা ঘটছে। তাই খোজখবর নিতে এখন টহলরত অবস্থায় আছি।
বিশ্বনাথের বিভিন্ন স্থানে অর্ধ শাতধিক ককটেল বিষ্ফোরণ, এমপি শফিক চৌধুরীর বিরুদ্ধে অভিযোগ স্বতন্ত্র প্রার্থী মুহিবের, জনসাধারণের মধ্যে বিরাজ করছে উদ্বেগ-উৎকন্ঠা
Saturday, January 4, 2014
Labels:
# আমাদের সিলেট
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
No comments:
Post a Comment