বেলায়েত হোসাইন,শীর্ষ নিউজ,ঢাকা : ১৮ দলীয় জোট ঘোষিত আগামী ২৯ ডিসেম্বর মার্চ ফর ডেমোক্রেসি কর্মসূচিতে সর্বাত্মক প্রস্তুতি নিয়েছে জামায়াতে ইসলামী। এরই মধ্যে দেশের প্রতিটি জেলা ও মহানগরে আলাদা আলাদা করে প্রস্তুতি সভা সেরে ফেলেছে দলটি। যে কোনো ধরণের পরিস্থিতি ঘটতে পারে, এটা মাথায় রেখেই অনেকটা রণ প্রস্তুতি রয়েছে জামায়াতের। দলটির সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে এসব তথ্য।
সূত্র জানায়, গত বুধবার রাজধানীর একটি অজ্ঞাত স্থানে জামায়াতের ঢাকা মহানগরী আয়োজিত একটি প্রস্তুতি সভা অনুষ্ঠিত হয়। দলটির নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরীর সেক্রেটারি নুরুল ইসলাম বুলবুলের সভাপতিত্বে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরীর সহকারী সেক্রেটারি মুহাম্মদ সেলিম উদ্দীন ও মঞ্জুরুল ইসলাম ভূঁইয়া, ঢাকা মহানগরীর সহকারী সেক্রেটারি মোবারক হোসাইন, শিবির সেক্রেটারি জেনারেল আব্দুল জব্বার, শিবিরের কেন্দ্রীয় দপ্তর সম্পাদক আতিকুর রহমান, ছাত্র কল্যাণ সম্পাদক নাভিদ আনোয়ার, প্রচার সম্পাদক আবু সালেহ মোঃ ইয়াইয়াহ, শিক্ষা সম্পাদক মোবারক হোসাইন, স্কুল বিষয়ক সম্পাদক জাকির হোসাইন সেলিম ও গবেষণা সম্পাদক এনামুল হকসহ এক ঝাঁক নেতা।
বৈঠক সূত্র জানায়, সরকারের বাধাকে প্রতিহত করতে যেকোনো ধরনের লড়াইয়ের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় ওই বৈঠকে।
সূত্র জানায়, আগামী রোববারের কর্মসূচিতে যোগ দিতে এরই মধ্যে সারাদেশ থেকে সিংহভাগ জনশক্তি ঢাকায় চলে এসেছে। তারা শহরের বিভিন্ন মেস, হোটেল ও জামায়াত নিয়ন্ত্রিত ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোতে অবস্থান করছে।
সূত্রের দেওয়া তথ্যমতে, ইচ্ছা করেই জনশক্তির একটা অংশকে আপাতত ঢাকায় আনছে না দলটি। রোববার কর্মসূচির দিন ঢাকায় রওয়ানা হবে তারা।
এর কারণ হিসাবে জানা গেছে, সারাদেশ থেকে ঢাকায় আসার পথে সরকার দলীয় সমর্থক ও আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের বাধার মুখে পড়বে তারা। এটা আগে থেকেই অনুমান করে আছে দলটির নীতি নির্ধারনী ফোরাম। তাই আসার পথে সরকারের বাধায় পড়লে ইচ্ছাকৃতভাবেই গণ্ডগোল পাকাতে চাইবে ঢাকামুখি জামায়াতকর্মীরা। এর আওতায় রাখা হয়েছে দলের সবচেয়ে দক্ষ ও প্রশিক্ষিত জনশক্তিদের।
সারাদেশ থেকে শেষ বারের মত ঢাকা শহরকে বিচ্ছিন্ন করে দিতে রণ লড়াইয়ে নামবে তারা। এদের মধ্যে কারো কারো মৃত্যুবরণ করতে হবে এ সিদ্ধান্ত নিয়েই মাঠে নামবেন। মূলত ঢাকার চারপাশ ঘিরেই অবস্থান করবে এসব নেতাকর্মীরা। সরকার দলীয় সমর্থক ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে রুখে দিতে সর্বোচ্চ শক্তি দিয়ে লড়াই করবে তারা।
এব্যাপারে জামায়াতের কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদের এক সদস্য বলেন, বিগত পাচ বছরে সরকার আমাদের ওপর যে নির্যাতনের স্ট্রীম রোলার চালিয়েছে তার দাত ভাঙ্গা জবাব দিতে আমরা প্রস্তুত। যদি সরকার রোববারের কর্মসূচিতে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করে তাহলে এর সকল দায় সরকারকে নিতে হবে। ঢাকা আসার মুখে যেখানে বাধা দেওয়া হবে সেখানেই প্রতিরোধ গড়ে তোলা হবে।
মার্চ ফর ডেমোক্রেসি কর্মসূচির প্রস্তুতি ও সার্বিক বিষয় নিয়ে কথা হয় জামায়াতের অন্যতম নীতি নির্ধারক ও নির্বাহী পরিষদ সদস্য এইচএম হামিদুর রহমান আজাদের সঙ্গে। তিনি শীর্ষ নিউজকে বলেন, ১৮ দলীয় জোট ঘোষিত ২৯ ডিসেম্বরের মার্চ ফর ডেমোক্রেসি সফল করার লক্ষ্যে জামায়াতের পক্ষ থেকে ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। সেদিন ঢাকার বাইরে থেকেই জামায়াতের কয়েক লক্ষ লোক ঢাকায় আসবে। আর ঢাকার জনশক্তি তো আছেই। মার্চ ফর ডেমোক্রেসিতে লাখ লাখ লোকের সমাগম ঘটিয়ে গণঅভ্যুত্থান সৃষ্টি করে সরকারের পতন নিশ্চিত ও একদলীয় পাতানো নির্বাচন প্রতিহত করা হবে। তিনি বলেন, সভা-সমাবেশ, মিছিল জনগণের গণতান্ত্রিক, সাংবিধানিক অধিকার। সুতরাং জনগণ যেকোনো মূল্যে এই অধিকার প্রতিষ্ঠা করবে।
No comments:
Post a Comment