আমাদের সিলেট ডটকম:
বিশ্বনাথ উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি আলহাজ্ব মজম্মিল আলীর দোকান কোঠা ভাংচুরের ঘটনা অভিযোগ পাওয়া গেছে।
গত রোববার রাত ৯টায় উপজেলা সদরের নতুন বাজারে এ ঘটনাটি ঘটেছে।
এদিকে, চাঁদা না দেওয়ায় দোকান কোঠা নির্মাণ কাজে বাঁধা, ভাংচুর ও মালামাল (নির্মাণ সামগ্রী) চুরির অভিযোগ এনে উপজেলা যুবলীগের আহবায়ক মখদ্দছ আলী সহ ৩ জনের নাম উলেখ করে ও ১৭/১৮ জনকে অজ্ঞাতনামা অভিযুক্ত করে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন উপজেলা আ’লীগের সভাপতি। অন্য অভিযুক্তরা হলেন- শ্রমিক লীগ নেতা ময়না মিয়া ও উপজেলা যুবলীগ নেতা নুরুল হক মেম্বার।
প্রত্যক্ষদর্শী ও বাজারের ব্যবসায়ীরা জানান, উপজেলা সদরের নতুনবাজার ধানহাটায় একটি টিনসেটের দোকান ঘর করে দীর্ঘদিনধরে উপজেলার জানাইয়া গ্রামের হারিছ আলী গরুর মাংস বিক্রি করে আসছেন। কয়েকদিন পূর্বে বাজারের ভিতরের সংস্কার কাজ করার জন্য ওই দোকানঘর সরিয়ে নেওয়া হয়। উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি মজম্মিল আলী গত দুইদিন ধরে ওই জায়গা আধাপাকা দোকানঘর নির্মাণ কাজ শুরু করেন। ইতিমধ্যে তিনি পাকা কয়েকটি পিলার নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করেন। এতে জানাইয়া গ্রামবাসি ক্ষিপ্ত হয়ে রবিবার রাত ৯টায় দল বেধে উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি মজম্মিল আলীর নির্মিত দোকান ঘরের পিলার উপড়ে ফেলে ও দোকানঘর নির্মাণের আসবাবপত্র নিয়ে যায়। এক পর্যায়ে মজম্মিল আলীর পক্ষের লোকজন কে জানাইয়া গ্রামবাসি ধাওয়া করলে তারা পালিয়ে যায়। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে। শেষ খরব পাওয়া পর্যন্ত উভয় পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে। যে কোন সময় বড় ধরনের সংর্ঘষের আশংকা করছেন এলাকাবাসি।
লিখিত অভিযোগে বাদি উলেখ করেছেনম বিশ্বনাথ উপজেলা সদরের নতুন বাজারস্থ ধানহাটা সামনে বাদির দখল খরিদ সূত্রে মালিকানাধীন ভূমিতে থাকা ‘বাঁশের খুটি ও টিন শেডের ঘর ভেঙ্গে পাকাঘর নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহন করেন। কাজ চলাকালীন সময়ে গত ২০ ডিসেম্বর উক্ত অভিযুক্তরাসহ ১৭/১৮ জনের একটি সঙ্গবদ্ধ দল বাদির কাছে ৫ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। চাঁদার টাকা না দেওয়ায় গত ২২ ডিসেম্বর রাত ৯টায় অভিযুক্ত ময়না মিয়া, নুরুল হক, মকদ্দছ আলীসহ অজ্ঞাতনামা ১৭/১৮ জনের অস্ত্রসস্ত্রে সজিত একটি সন্ত্রাসী দল অনাধিকার প্রবেশ করে দোকান নির্মাণে পিলার ভাংচুর করে ও বাদির ক্ষতিসাধন করার লক্ষ্যে প্রায় ৪ লাখ ৫০ হাজার টাকা মূল্যের নির্মাণ সামগ্রী (রড, সিমেন্ট, স্টীলের বক্স) চুরি করে নিয়ে গেছে বলে লিখিত অভিযোগে উলেখ করেছেন বাদি।
এ ব্যাপারে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মজম্মিল আলী বলেন, সরকারের কাছ থেকে লিজ নিয়ে ওই জায়গায় দোকানঘর নির্মাণ করে আসছি। কিন্তু জানাইয়া গ্রামবাসী প্রায় শতাধিক লোকজন রবিবার রাতে হঠাৎ করে দোকানঘর নির্মাণ সামগ্রী লুটপাট করে নিয়ে যায়। এতে প্রায় সাত লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে তিনি দাবি করেন। চাঁদা দাবি, বাঁধা প্রদান ও মালামাল চুরি করার অভিযোগ মিথ্যা, বানোয়াট, উদ্দেশ্য প্রনোদিত দাবি করে ইউপি সদস্য নূরুল হক বলেন, সরকারি জায়গায় দোকান কোঠা নির্মাণের করতে চাইলে সাধারণ জনগণ তা প্রতিহত করেছেন।
উপজেলা যুবলীগ নেতা জানাইয়া গ্রামের শামিম আহমদ বলেন, বাজারের বিভিন্ন অবৈধ দখল উচ্ছেদ করতে আমরা (এলাকাবাসী) বারবার প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করি। কিন্তু প্রশাসন কোন পদক্ষেপ গ্রহন করেনি। তাই অবৈধ দখল উচ্ছেদে নেমেছে জনতা।
বিশ্বনাথ থানার ওসি রফিকুল হোসেন বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনি। এ ব্যাপারে লিখিত অভিযোগ পাওয়া গেছে। তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যাবস্থা নেয়া হবে বলে তিনি জানান।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার সোনামনি চাকমা দখল-পাল্টা দখলের কথা সাংবাদিকদের কাছে স্বীকার করে বলেন, এ জায়গা নিয়ে আদালতে মামলা চলছে। কেউ দোকান নির্মানের চেষ্টা করলে তা অবৈধ।
No comments:
Post a Comment