সময় কাটছে নামাজ পড়ে- শুয়ে

Wednesday, December 11, 2013

মানবজমিন: ফাঁসির মঞ্চে ওঠার অপেক্ষায় ছিলেন। এর মধ্যেই ছেদ পড়েছে আইনি প্রক্রিয়ায়। ফের অপেক্ষার প্রহর। এমন

অবস্থায় স্থির ও স্বাভাবিক আছেন ফাঁসি কার্যকরের অপেক্ষায় থাকা আবদুল কাদের মোল্লা। সময়মতো নামাজ আদায় করেছেন। গতকাল দুপুর ১২টার দিকে গোসল করেছেন। খাবারও খেয়েছেন, তবে সামান্য। দিনের বেশির ভাগ সময় বসে ছিলেন জায়নামাজে। ইবাদত-বন্দেগি করে সময় কাটছে তার। ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের কনডেম সেলের বাইরে বেরোনোর নিয়ম নেই। দিনে একবার মাত্র গোসলের সময় বাইরে বেরোতে পারেন। খাবারও দেয়া হয় সেলের ভেতরেই। তাই দিনের পুরোটা সময়ই তার কেটেছে কনডেম সেলের ভেতরেই। ফাঁসির দণ্ডাদেশ স্থগিত করার পর এভাবেই সময় কাটছে একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে অভিযুক্ত আবদুল কাদের মোল্লার। ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে। কাদের মোল্লার বিষয়ে আনুষ্ঠানিক কোন বক্তব্য দেননি কেউ। সন্ধ্যায় আইজি প্রিজন মাঈন উদ্দিন খন্দকার এই প্রতিবেদককে বলেন, আমাদের সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছিল। রাত সোয়া ১১টার দিকে আদেশ পাওয়ার পর আমরা তাকে সঙ্গে সঙ্গে বিষয়টি জানিয়ে দেই। তিনি এসময় শান্ত ও স্বাভাবিক ছিলেন। এখন তিনি কনডেম সেলে স্বাভাবিক অবস্থাতেই রয়েছেন। অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এখন তারা নতুন কোন আদেশ পাওয়ার অপেক্ষা করছেন। আদেশ অনুযায়ী পরবর্তী পদক্ষেপ নেয়া হবে বলে তিনি জানান। গত মঙ্গলবার রাত ১২টা ১ মিনিটে কাদের মোল্লার ফাঁসির রায় কার্যকর করার কথা ছিল। নেয়া হয়েছিল সকল প্রস্তুতি। কিন্তু শেষ মুহূর্তে রাত ১০টা ২০ মিনিটে এক আবেদনের প্রেক্ষিতে বুধবার সকাল সাড়ে ১০টা পর্যন্ত দণ্ডাদেশ কার্যকর স্থগিত করেন চেম্বার জজ। গতকাল শুনানি শেষে আজ বৃহস্পতিবার পর্যন্ত শুনানি মুলতবি করে স্থগিতাদেশ বহাল রেখেছে আদালত।

ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার সূত্র জানায়, মঙ্গলবার রাতে কাদের মোল্লার ফাঁসির সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছিল। রাত সোয়া এগারটার দিকে কাদের মোল্লাকে তার দণ্ডাদেশ স্থগিতাদেশের আদেশের বিষয়টি জানানো হয়। একজন ডেপুটি জেলার কাদের মোল্লার সেলে গিয়ে এই তথ্যটি জানান। তখন তিনি ‘আল্লাহু আকবর’ বলে ধ্বনি দেন। শুকরিয়া আদায় করেন আল্লাহর কাছে। এর আগে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার জন্য রাত দশটার দিকে তাকে গোসল করানো হয়। নিয়মমাফিক কারাগারের একজন মৌলভী তাকে তওবা পড়ান। ফাঁসির আসামির জন্য নির্ধারিত নতুন পোশাকও পরানো হয় তাকে। সব সময় তিনি আল্লাহর নাম জপ করছিলেন।

কারা সূত্র জানায়, রাতে দণ্ডাদেশ স্থগিতাদেশের বিষয়টি তাকে জানানো হলে তিনি কিছুটা শান্ত ও স্বাভাবিক হয়ে যান। তবে রাতে তার ভাল ঘুম হয়নি। মধ্যরাতে ঘুম থেকে উঠেও নামাজ আদায় করেছেন। জায়নামাজে বসে জিকির করেছেন। ফজরের নামাজ আদয় করে আবার একটু ঘুমিয়েছেন। সকালের নাস্তা দেয়া হলে সামান্য কিছু খেয়েছেন। দুপুর ১২টার দিকে তিনি গোসল করেন। এরপর একটার দিকে তাকে দুপুরের খাবার দেয়া হয়। দুপুরের খাবারও তিনি পুরোপুরি খেতে পারেননি। সামান্য খেয়েই তিনি খাবার শেষ করে উঠে যান। মঙ্গলবার রাতে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের সামনে কাদের মোল্লার এক ভাগ্নে জানান, তার মামা অনেক শক্ত মনের মানুষ। তিনি মৃত্যুকে ভয় পান না। তাকে অন্যায় ভাবে ফাঁসি দেয়া হলেও ইসলামের জন্য শহীদ হতে তার কোন আফসোস নেই। এই ফাঁসির দণ্ডাদেশকে তারা ইসলামের জন্য জীবন উৎসর্গ করা বলে মনে করছেন। এমনকি শেষ সাক্ষাতের সময় পরিবারের সবাইকে শান্ত থাকার পরামর্শও তিনি দিয়েছেন।





Share on :

No comments:

Post a Comment

 
Copyright © 2015. Sylhet News.
Design by Herdiansyah Hamzah. Published by Themes Paper. Distributed By Kaizen Template Powered by Blogger.
Creative Commons License