আমাদের সিলেট ডটকম:
সিলেট নগরীতে জামায়াত শিবির কর্মীদের সাথে পুলিশ ও র্যাবের দফায় দফায় সংঘর্ষের মধ্য দিয়ে সিলেটে পালিত হচ্ছে জামায়াতের ডাকা সকাল সন্ধ্যা হরতাল। ইতোমধ্যে পুলিশের গুলিতে শিবিরের ৩ কর্মী আহত হয়েছেন। তাদেরকে নগরীর একটি বেসরকারী ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়েছে। এছাড়া, পিকেটিং কালে ২ জামায়াত নেতাসহ ৬ জনকে আটক করেছে পুলিশ। দুপুর, ১টা পর্যন্ত জামায়াত শিবিরের ৬ কর্মীসহ ১০ জনকে আটক করার খবর পাওয়া গেছে।
এদিকে, ১৮ দলের অবরোধ চললেও আজ নগরীতে ১৮ দলীয় জোটের কোন মিছিল সমাবেশ চোখে পড়ছেনা। তবে, জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সভাপতিসহ গ্রেফতারকৃত নেতৃবৃন্দের মুক্তির দাবীতে একই দিনে ছাত্রদলের ডাকে হরতাল পালিত হচ্ছে সিলেট বিভাগে। সকালে হরতালের সমর্থনে নগরীর জিন্দাবাজার এলাকায় সমাবেশ করেছে ছাত্রদল।
সকাল সাড়ে ১১টার দিকে জামায়াত শিবির কর্মীরা কীন ব্রীজের দক্ষিণ প্রান্তে সমবেত হয়। তারা সেখান থেকে মিছিল বের করার চেষ্টা করে। এ সময় টহল পুলিশের একটি দল তাদের ধাওয়া করে। ফলে, জামায়াত শিবির কর্মীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে পড়ে। তাদেরকে ধাওয়া করে পুলিশ কীন ব্রীজের উপরে নিয়ে যায়। অন্যদিকে, কীন ব্রীজের উত্তরপ্রান্ত সুরমা আগে থেকে অপেক্ষমাণ পুলিশ সদস্যরা ছাত্রশিবির কর্মীদের গতিরোধ করে। ফলে উভয় প্রান্তে পুলিশের বেষ্টনীর মধ্যে পড়ে যায় জামায়াত শিবির কর্মীরা। এক পর্যায়ে জামায়াত শিবির কর্মীরা সুরমা পয়েন্টে দিকে পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট পাটকেল নিক্ষেপ করলে পুলিশও পাল্টা সাউন্ড গ্রেনেড ও রাবার বুলেট ছুড়ে কিছুটা পিছু হটে। ফলে, জামায়াত শিবির কর্মীরা কীন ব্রীজ থেকে নেমে কালিঘাটের দিকে চলে যাবার চেষ্টা করে। এ সময় পুলিশ তাদের ধাওয়া করে। এখানে পুলিশের ছোড়া গুলির স্পিন্টারে আহত হন মদন মোহন কলেজ ছাত্রশিবির কর্মী মুন্না (২০) সহ ৩ জামায়াত শিবির কর্মী। এদের মধ্যে একজনের গলায়, এক জনের মাথায় ও এক জনের পায়ে স্প্লিন্টার বিদ্ধ হয়। পরে জামায়াত শিবির কর্মীরা ছড়ার পাড় হয়ে সোবহানীঘাটের দিকে চলে যায়। এখানে সংঘর্ষে পুলিশ অন্তত: ২০ রাউন্ড ফাঁকাগুলি ও ৪ রাউন্ড সাউন্ড গ্রেনেড ছুড়েছে বলে জানিয়েছেন কোতোয়ালী থানার ওসি আতাউর রহমান।
এছাড়া, সকালে নগরীর কদমতলী পয়েন্ট এলাকায় জামায়াত শিবির কর্মীরা সমবেত হয়ে মিছিল বের করার চেষ্টা করলে পুলিশ ধাওয়া করে মিছিলকারীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এখান থেকে আতিকুর রহমান ও আব্দুস শাকুর নামের ২ জামায়াত কর্মীকে আটক করে পুলিশ।
সকাল সাড়ে ৭টার দিকে ছাত্রশিবির কর্মীরা পাঠানটুলা এলাকায় রাস্তার উপর টায়ারে আগুন দিলে পুলিশ ধাওয়া করে।মদীনা মার্কেট এলাকায় জামায়াত শিবির কর্মীরা সকালে মিছিল বের করার চেষ্টা করলে পুলিশ মিছিলকারীদের ধাওয়া করে হটিয়ে দেয়। সকাল ১০টার দিকে নগরীর শাহী ঈদগাহ এলাকায় হরতালের সমর্থনে জামায়াত শিবির মিছিল করে। এখানেও পুলিশ মিছিলকারীদের ধাওয়া করে বেশ কয়েক রাউন্ড ফাকা গুলি ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে। তবে, এতে কেউ হতাহত হয়নি। এছাড়া, হরতালের সমর্থনে নগরীর বাবনা মোড়, পুরাতন রেল স্টেশন, শেখঘাট, কুমারগাঁও ও চৌকিদেখী এলাকায় হরতালের সমর্থনে মিছিল করেছে জামায়াত শিবির কর্মীরা। হরতালের কারণে আজ সকালে নগরীর হুমায়ুন রশিদ চত্বর এলাকায় সড়ক অবরোধ করতে দেয়া হয়নি ১৮ দলের নেতাকর্মীদের। সকাল থেকে হুমায়ুন রশিদ চত্বরে পুলিশ, র্যাব ও বিজিবি সদস্যরা পুরো চত্বর দখল করে রাখে।
No comments:
Post a Comment