আমাদের সিলেট ডটকমঃ
সিলেটে ১৮ দল ও মহাজোটের সমঝোতার রাজনীতিতে নেই মহাজোটের শরীক অন্য দলগুলো। নগরীতে হরতাল বিরোধী কর্মসূচিতে সক্রিয় দেখা যাচ্ছে শুধুমাত্র মহাজোটের প্রধান আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গ সংগঠনগুলোকে।
১৮ দলীয় জোট হরতালের সমর্থনে এক মঞ্চে সমাবেশ করলেও বিরোধী শিবিরের শরীক দলগুলোর তত্পরতা খুব একটা চোখে পড়ছেনা। মহাজোটের শরীক দল জাসদের এক নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেছেন, সিলেটে আওয়ামী লীগ ১৮ দলের সাথে সমঝোতা করে মিছিল সমাবেশ করছে। এই সমঝোতার রাজনীতিকে আমরা ঘৃণা করি। আন্দোলন যদি হয়, বিএনপি ও জামায়াত শিবিরের মত স্বাধীনতা বিরোধীদের প্রতিহত করার প্রকৃত আন্দোলন, কেবলমাত্র তখনই আমরা রাজপথে নামবো।
১৮ দলের ডাকা ৮৪ ঘন্টার হরতালের প্রথম দিনেও আজও সিলেটে সমঝোতার রাজনীতি পরিলক্ষিত হয়েছে। সাঁজ সকালে নগরীতে প্রথমেই মিছিল করে জামায়াত। এ্রপর আবার ১৮ দলের ব্যানার নিয়ে মিছিলে নামেন বিএনপি ও জামায়াতের নেতাকর্মীরা। তাদের সাথে লেবার পার্টি ও খেলাফত মজলিসের নেতারাও ১৮ দলের মিছিলে যোগ দেন। অবশ্য, বিএনপি নেতা এডভোকেট সামছুজ্জামান জামানের নেতৃত্বে বিএনপি, যুবদল, ছাত্রদল, মহিলা দল, মুক্তিযোদ্ধা দল ও তাঁতিদলের নেতাকর্মীরা হরতালের সমর্থনে আলাদা কর্মসূচি পালন করেন।
১৮ দলের নেতারা সকালে মিছিল নিয়ে কোর্ট পয়েন্ট হয়ে হকার্স পয়েন্ট সংলগ্ন করিম উল্লাহ মার্কেটের সামনে অবস্থান নেন। এরপপর দুপুর পর্যন্ত তারা সেখানেই অবস্থান করেন। কোন মিছিল বা সমাবেশ করেননি তারা। দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ধীরে ধীরে ১৮ দলের সিনিয়র নেতারা এ স্থান ছেড়ে যান।
এ সময় আস্তে আস্তে নগরীর কোর্ট পয়েন্ট এলাকায় আসতে থাকেন আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতা কর্মীরা। তারা দুপুর পৌনে ১টার দিকে মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি বদর উদ্দিন আহমদ কামরানের নেতৃত্বে কোর্ট পয়েন্ট থেকে হরতাল বিরোধী মিছিল বের করেন। মিছিল কোর্ট পয়েন্ট থেকে শুরু হয়ে সুরমা মার্কেট ঘুরে পুণরায় কোর্ট পয়েন্টে গিয়ে সমাবেশে মাধ্যমে শেষ হয় জোহরের নামাজের আগেই।
এরপর বিকেলে আবারো কোর্ট পয়েন্টে আসেন ১৮ দলের নেতারা। তারা হরতালের সমর্থনে কোর্ট পয়েন্ট এলাকায় মিছিল সমাবেশ করেন।
দীর্ঘ দিন ধরে নগরীতে হরতাল চলাকালে এ দৃশ্যই চোখে পড়ে। সকালে রাজপথ থাকে হরতাল সমর্থকদের দখলে। দুপুরটা ছেড়ে দেয়া হয় মহাজোটের হরতাল বিরোধী কর্মসূচির জন্য। বিকেলে আবারো রাজপথে থাকেন ১৮ দলের কর্মীরা।
সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্রের সাথে কথা বলে জানা গেছে, মহাজোটের প্রধান শরীক আওয়ামী লীগ ও ১৮ দলের প্রধান শরীক বিএনপির একাংশের সাথে এভাবেই সমঝোতা করে আন্দোলনের পলিসি নির্ধারণ করা হয়েছে।
কিন্তু দুই প্রধান রাজনৈতিক দলের এহেন সমঝোতার রাজনীতিকে মানতে নারাজ মহাজোটের শরীক দলগুলোর নেতারা। তাদের মন্তব্য হলো, যদি বিরোধী দলের সাথে সমঝোতা করে চলতেই হয়, তাহলে আন্দোলন কেন ? নিয়ম রক্ষার হরতাল বিরোধী আন্দোলনে বরং মহাজোটের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হচ্ছে বলে তারা মনে করেন।
মহাজোটের শরীক জাসদের সিনিয়র এক নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, মহাজোট নামেই শুধু আছে সিলেটে। গত ৫ বছরে যা সুবিধা নেয়ার, তা শুধু নিয়েছেন আওয়ামী লীগের নেতারা। সুবিধা নেয়ার মানসিকতা নিয়ে যারা দলে নাম লেখান, তারা নিয়ম রক্ষার আন্দোলনই করবেন। জামায়াতের সাথে সমঝোতা করে যদি রাজপথে নামতে হয়, তাহলে সেই আন্দোলনে আমরা নেই- এমন কথা আমরা বহু আগেই জানিয়ে দিয়েছি আওয়ামী লীগ নেতাদেরকে।
No comments:
Post a Comment